সরকারি/স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানসমূহ
“চাকুরী যখন করবো তখন সরকারি চাকুরীই করবো। একটু সময় দিয়ে প্রস্তুতি নিয়ে হলেও সরকারি চাকুরীটাই করতে হবে আমাকে।”
“ নাহ। অনেক হয়েছে। আর নয়। পাশ করেই একটা চাকুরী দরকার। হোক সেটা বেসরকারি। আমি তাতেই খুশি।”
আমাদের দেশের পাশ করা প্রকৌশলীদের মধ্যে দুইধরনের আকাঙ্ক্ষাই লক্ষনীয়। একটা সময় ছিল সরকারি চাকুরিতে যাওয়ার ক্ষেত্রে অনেকের মধ্যেই কিছুটা অনীহা কাজ করতো। এর মূলে ছিল কম বেতন। কিন্তু চাকুরীর নিরাপত্তার ক্ষেত্র বিবেচনা করলে সবার পছন্দের না হলেও আগ্রহের জায়গা ছিল সরকারী চাকুরী। তবে বর্তমানে নিরাপত্তার সাথে উচ্চমান বেতন আর পেশাগত ক্ষমতা বৃদ্ধি প্রকৌশলীদেরকে বহুগুণে আগ্রহী করে তুলেছে। [এই অনুচ্ছেদটি লিখেছেন-এমরান হোসেন, বিওপি ইঞ্জিনিয়ার, হরিপুর পাওয়ার লিমিটেড। অনুমতি ছাড়া কপি করবেন না।]
পাঠক পছন্দই বলি আর প্রকৌশলীদের পছন্দই বলি, তালিকায় যেহেতু সরকারি চাকুরীর ক্রমই প্রথমে তাহলে সেটা নিয়েই আগে আলোচনা করা যাক।
বিদ্যুৎ আর গ্যাস। এই দুইয়ের উপর সবার নজর। বিদ্যুৎখাতে সরকারের লক্ষমাত্রা বাড়ার সাথে সাথে চাকুরীর ক্ষেত্রও বাড়ছে। এক ঢিলে দুই পাখি মারার ব্যবস্থা করা যাক। শুধু প্রতিষ্ঠানের নাম না জেনে একটু ছক আকারে জানার চেষ্টা করি তাহলে চাকুরী ভাইভাতে কাজে দিতে পারে।
উক্ত সকল প্রতিষ্ঠানেই প্রতিবছর কমবেশি যন্ত্রকৌশলীদের জন্য চাকুরীর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি আসে।
বিদ্যুৎ সেক্টরের এই বিশাল রাজ্যে আরো একটা প্রতিষ্ঠান যুক্ত হয়েছে- রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এই প্রতিষ্ঠানে প্রতিবছর গড়ে শতাধিক প্রকৌশলী নিয়োগ দিচ্ছে। আশা করা যায় আরো বেশ কয়েক বছর এই পরিমাণ প্রকৌশলী নিয়োগ দিতে থাকবে এই প্রতিষ্ঠানটি। এর বাইরেও দেশে অনেক কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে। কয়লাভিত্তিক এই বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোও নিয়োগ দিচ্ছে। উক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো কিছু কিছু পুরোপুরি সরকারি আর কিছু কিছু সায়ত্ত্বশাসিত।[এই অনুচ্ছেদটি লিখেছেন-এমরান হোসেন, বিওপি ইঞ্জিনিয়ার, হরিপুর পাওয়ার লিমিটেড। অনুমতি ছাড়া কপি করবেন না।]
বিদ্যুৎ সেক্টর নিয়ে বর্তমানে দেশের যা অবস্থা তাতে বাড়াবাড়ি পর্যায়ে বললেও অপরাধ হবে না বা ভুল বলা হবে না। সত্য জানতে হলে কাছে যেয়ে জানতে হবে না। ইউটিউব বা গুগলে সার্চ দিলেই বুঝা যাবে পায়রা বা মাতাড়বাড়িতে কি ঘটছে। বলা হচ্ছে দেশের অন্যতম পাওয়ার হাব বা পাওয়ার অঞ্চল হতে যাচ্ছে এই এলাকা দুইটি। সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে জয়েন্ট ভেঞ্চারে কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান দ্রুত দেশের বিদ্যুৎখাতে যুক্ত হওয়ার সাথে সাথে প্রকৌশলীদের জন্যও কর্মের ঠিকানা হয়ে যাত্রা শুরু করেছে। এবং এই যাত্রা সত্যিকার অর্থে যান্ত্রিক প্রকৌশলীদের জন্য অবশ্যই আর্শীবাদ।[এই অনুচ্ছেদটি লিখেছেন-এমরান হোসেন, বিওপি ইঞ্জিনিয়ার, হরিপুর পাওয়ার লিমিটেড। অনুমতি ছাড়া কপি করবেন না।]
আগেই বলেছি গ্যাস সেক্টরও প্রকৌশলীদের চাকুরীর একটা বড় ক্ষেত্র। পেট্রোবাংলার আওতাধীন কোম্পানীগুলোর নাম একটা ছক আকারে তুলে ধরা যাক। প্রতিবছর এই প্রতিষ্ঠানগুলো কমবেশি অনেক যন্ত্রকৌশলী নিয়োগ দিয়ে থাকে। তবে এগুলো প্রতিষ্ঠানের বেতন কাঠামো বিদ্যুৎ কোম্পানীগুলোর সাথে তারতম্য আছে।
উক্ত মন্ত্রণালয়ের অধীনে এইরকম আরো একটি প্রতিষ্ঠান Bangladesh Petroleum Corporation (BPC)এবং এর অধীনস্থ প্রতিষ্ঠানসমূহ হলো- ERL, POCL, JOCL, MPL, LPGL, ELB, SAOCL. এই প্রতিষ্ঠানসমূহও আলাদা আলাদা নিয়োগ দিয়ে থাকে।
এতক্ষণে যন্ত্রকৌশলের জাহাজে যেসব যাত্রী উঠেছেন তারা হয়তো বুঝে গেছেন আসলে কতগুলো প্রতিষ্ঠানে চাকুরী হতে পারে। সবে তো শুরু। এখন আরো কিছু প্রতিষ্ঠানের নাম জানা যাক যেসব প্রতিষ্ঠান আমরা সবাই চিনি-জানি তবুও এখনকার জানাটা একটু দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টিয়ে জানা। মানে কর্মের তাগিদে জানা। প্রতিষ্ঠানগুলো দুই-এক বছর পর পরই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। যেমনঃ WASA, RAJUK, BWDB, BADC, BCIC, BIWTA, BITAC, BSEC, BEPZA, BOF, BCSIR, BSFIC, BSRI, BJMC, Bangladesh Tea Board, BFDC, BRTA, DMTCL, BAF, Bangladesh Army, NAVY, বাংলাদেশের সকল ব্যাংক, পিএসসির আওতাধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, নন ক্যাডার, বিসিএস ক্যাডার, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ইত্যাদি। [এই অনুচ্ছেদটি লিখেছেন-এমরান হোসেন, বিওপি ইঞ্জিনিয়ার, হরিপুর পাওয়ার লিমিটেড। অনুমতি ছাড়া কপি করবেন না।] এছাড়াও আমরা যেসব ইঞ্জিানয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয় বা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় দেখছি এইসব প্রতিষ্ঠানে ইঞ্জিনিয়ারিং সেকশন বলে একটা আলাদা বিভাগ থাকে। এসব বিভাগেও মাঝে মাঝে নিয়োগ দেওয়া হয়। সিটি করপোরেশনগুলোতেও একই অবস্থা। এই রকম আরো অনেক প্রতিষ্ঠান আছে। সার কারখানাগুলো সম্পর্কে বলিনি দেখে অনেকে যারা একটু থমকে দাঁড়ালেন তাদের জন্য বলে রাখি এইগুলো BCIC এর আওতাধীন প্রতিষ্ঠান। এই নিয়োগগুলো একসাথেই হয় সচরাচর। এছাড়াও দেশে নতুন নতুন প্রজেক্ট আসছে নতুন নতুন প্রতিষ্ঠান যাত্রা আরম্ভ করছে। [এই অনুচ্ছেদটি লিখেছেন-এমরান হোসেন, বিওপি ইঞ্জিনিয়ার, হরিপুর পাওয়ার লিমিটেড। অনুমতি ছাড়া কপি করবেন না।]